
শবে বরাতের নামাজঃ
শাবান মাসের পঞ্চদশ তারিখের রাত টিকে বলা হয় শবে বরাত। শবে বরাত অর্থ
হল বরাতের রাত! এ রাতে জীব-জগতের আগামী বছরের ভাগ্য অর্থাৎ রুজু রোজগার এবং ভালোমন্দ
ইত্যাদি নির্দিষ্ট হয় বলে এই রাত কে বলা হয় শবে বরাত। এহা একতি অত্যন্ত সার্থক নামকরন।
শবে-বরাতে নামাজের নিয়মঃ
এরাতে এ নামাজের রাকারের সংখ্যার কোন সুনিদিষ্ট দলিল নেই!এই সম্প্রকে
যে সব বর্ণনা রয়েছে,তাহার মর্মে কেবল এই টুকুই উপলদ্বি করা যায় যে, এই নামাজ যত বেশি
আদায় করা যায়, ততই ছাওয়াব পাওয়া যায়। এই নামাজ আদায় করার নিয়ম এই যে, এশার নামাজের
পর বেতের নামাজ বাকি রেখে এই নামাজ আদায় করতে হয়। দুই দুই রাকাত বা চার রাকাতের নিয়ত করে এই নামাজ আদায় করতে হয় । সুরা কেরাতের কোন সু নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকলেও
অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামদের মতে, এ নামাজের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে সুরা এখলাস,এবং
দ্বিতীয় রাকাত ও একই সুরা পাঠ করতে হয়। অবশ্য
কোন কোন ওলামায়ে কেরাম বলেন যে, সবে কদরের নেয় এই নামজেও প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার
সাথে সুরা এখলাস পাঠ করলে ভাল হয়। বিভিন্ন গ্রন্থে এরূপ বর্ণীত হয়েছে যে, এই নামাজের
প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে এক বার সুরা কদর,এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে
দশবার,পঁচিশবার সুরা এখলাস পাঠ করে প্রতি রাকাত আদায় করবে।অতঃপর একশত বার দরুদ শরিফ
পাঠ করে মোনাজাত করবে। অন্য কিতাবে লিখা আছে, এ রাতে বার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।রাহার
প্রথম চার রাকাতে প্রতিরাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে দশবার করে সুরা এখলাস পাঠ করবে।তার
পরবর্তি চার রাকাতে প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা কদর,এবং পঁচিশবার সুরা এখলাস
পাঠ করবে। তাহার পরবর্তী চার রাকাতে প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে পঞ্চাশবার সুরা
এখলাস পাঠ করবে।অতঃপর একশাত বার দরুদ শরিফ পাঠ করতঃ দুহাত উঠিয়ে মোনাজাত করবে।
আরেক কিতাবে বর্ণীত হয়েছে, রাসুল(সাঃ) এই রাতে এশার নামাজ বাদে দুরাকাতের
নিয়তে চৌদ্দ রাকাত নফল নামাজ আদায় কতেন এবং নামাজ শেষে নিম্নক্ত নিয়মে কোরআন পাঠ করতেন
এবং মোনাজাত করতেন। নামাজে প্রতি রাকাতে তিনি সুরা ফাতেহার সাথে দশবার করে সুরা এখলাস
পাঠ করতেন এবং নিম্নক্তভাবে নামজের পরে কোরানে পাকে সুরা সমুহ পাঠ করে মোনাজাত করতেন।
যথাঃ
১৪ সুরা ফাতেহা,১৪ বার সুরা এখলাস,১৪বার সুরা ফালাক,১৪ বার সুরা নাস,
১৪ বার আয়াতুল কুরসি, এবং ১বার লাক্বাদ জায়াকুম হতে উক্ত আয়াতের শেষ পর্যন্ত পাঠ করতেন।
উক্ত কিতানে উল্লেখিত হয়েছে যে,এরুপ ভাবে নামাজ আদায় করলে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে
বিশ বছরের ইবাদাতের ছাওয়াব বকসিশ করেন।ইহা ছাড়া বিভিন্ন কিতাবে বর্ণীত হইয়েছে যে, দু
দু রাকাতের নিয়মে এ নামাজ আদায় করলেই অধিক ছাওয়াব হাছিল হয়। আর এই দুদু রাকাতের প্রতি
রাকাতেই সুরা ফাতেহার সাথে তিন বার বা সাত
বার সুরা এখলাস পাঠ করাই উত্তম। কেননা সুরার সংখ্যা বেশি না বাড়িয়ে নামাজের মধ্যে মনোযোগ
ও একাগ্রতা সহকারে পাঠ করাই ভাল।পক্ষান্তরে, সুরার সংখ্যা হিসাবের দিকে খেয়েল বেশি
রাখা নামাজির জন্য হিতকর নয়। এ রাতে নামাজ ব্যতীত কোরআন পাকে বিভিন্ন সুরা তেলাওয়াতের
ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন কিতাবে বর্ণীত হয়েছে।
কোন এক কিতাবে উল্লেখ আছে,এরাতে ৭বার সুরা দোখান, ৩ বার সুরা ইয়াছিন
পাঠ করলে আল্লাহতায়ালা হায়াত এবং রুজি রোজগার বৃদ্ধি করে দেন। এবং বেশুমার গুবাহ মার্জনা
করেন। এহা ছাড়া কিতাবে আরো বর্ণীত আছে যে, এ তারিখ সন্ধ্যার সময় “ লা হাওলা ওলা-কুয়াতা
ইল্লাবিল্লাহ” পাঠ করলে বহু ছাওয়াবের অধিকারী হয়া যায়।
হাদি শরিফে এরূপ বর্ণিত হয়েছে
যে, শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত সূর্যাস্ত কালে ইহা চব্বিশবার পাঠ করলে আল্লাহয়ালা
চব্বিশ বছরের ছগিরা গুনাহ মাফ করে দেন।