পবিত্র ইসলামের আলোর শিখাকে অনির্বাণ
ওসমুজ্জ্বল রাখার জন্য মুসলিম বির সেনানীরদল শানিত কৃপান হস্তে শত্রুর মোকাবেলা
করিবার জন্য ঝাঁপাইয়া পরিলেন যুদ্বের মোয়দানে। জামে শাহাদাতের প্রবল আকর্ষণ ও আল্লাহ
পাকের সান্নিধ্য লাভের তীব্র অনুপ্ররনা তাহাদিগকে উজ্জীবিত করিয়া তুলিল। সত্য ,ন্যায়,এবং
মঙ্গলের প্রতিষ্ঠার জন্য মুজাহিদ বাহিনী সদফা তৎপর হইয়া উঠিল। তাই প্রায় যুদ্বেই কোণ
না কোণ কাজের জন্য ,তাহা না হইলেও অন্ততঃ আযান দেওয়ার জন্য হযরত বেলাল (রাঃ) এর নাম
বিশেষ ভাবে স্বরনিয় হইয়া রহিয়াছে।তিনি যেসকল অভিযানে সক্রিয় অংশ গ্রহন করিয়াছিলেন,
নিম্নে উহার সংক্ষিপ্ত পাঠক-পাঠিকাগনকে উপহার দেওয়া হইলঃ
বদরের যুদ্বঃ ১৭ই রমজানুল মোবারক,হিজরি
২য় শাল। কুরাইশদের বিরুদ্বে মহানবি (সাঃ)এর নেতৃতে ২৩৮ জন আনছার এবং ৮৬ জন মোহাজের
লইয়া গঠিত মুস্লিম বাহিনী মদিনা হইতে ৮০ মেইল
দক্ষিণ পশ্চিমে বদরের উপত্যকায় সমবেত হইলেন।আর
আরিসা পাহাড়ের বাদ-দেশে মুসলিম শিবির স্থাপিত হইল শুক্রবারে শুরু হইল যুদ্ব।অসামান্য
রন নৈপুন্য, অপূর্ব বিক্রম,অপরিসীম নিয়মানুবর্তিতার সংগে যুদ্ধ করিয়া
মুসলমানগন বদরের গুরুপ্তপূর যুদ্ধে জয়লাভ করেন।
যুদ্ধে বিধর্মী কুরাইশদেরকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হইতে হয়। এই যুদ্ধে ৭০জন কুরাইশ সন্য
নিহত হয় সমসংখ্যা বন্দি হয় অপর দিকে মাত্র ১৪জন মুসলিম সন্য সাহাদাত বরন করেন। ঘৃনিত
আবুজেহেল ও দুরাচার উমায়য়া এই যুদ্ধে নিহত হয়। হযরত বিলাল (রাঃ)এর পুর্বতন মালিক,যে
তাঁহার উপর অমানুষিক বর্বরোচিত অত্যাচার করিয়াসিল,যে মহানবী (সাঃ)-কে ঘায়েল এবং ইসলামকে
নির্মুল করিবার জন্য কোমর বাঁধিয়া লাগিয়াছিল,ইসলামের সেই প্রধান শত্রু উমাইয়া ইসামের
বীর মুজাহিদ হযরত বিলাল(রাঃ)-এর তীক্ষ্ণ তরবারির
আঘাতে ধরাশায়ী হইয়াছিল। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে শত্রুরা পরাজিত হইয়া যখন পালায়ন করিতেছিল,তখন দুরাচার উমায়া আসন্ন বিপদ দেখিয়া মদীনা
পুরাতন বন্ধু আব্দুর রহমান ইবনে আঊফের সাহায্য প্রার্থনা করে
আব্দুর রহমান বব্ধুত্ত্বের প্রতিশ্রতি অনুযায়ি তাহাকে
বাচাইবার জন্য পশ্চাদ্ধাবসানকারী মুজাহেদিনের দৃষ্টির অগোচরে আকটি পাহাড়ের অন্তরালে
লুকাইয়া থাকিবার পরামর্শ দিলেন।কিন্তু বিজয়ের আনন্দে মাতয়ারা বীর সৈনিক হযরত বেলাল
(রাঃ) তাহাকে দেখিয়া ফেলিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য মুজাহেদীননের দৃষ্টি আকর্ষণ
করিয়া চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিলেন-;এই যে উমাইয়া ওতাহার ছেলে ---মহানবি (সাঃ) ও ইসলামের
ঘোর শত্রু পাহাড়ের অন্তরালে পালাইয়া গেল। সে যদি বাচিয়া যায় তাহলে আমার বাচিয়া থাকা
নিরর্থক। উমাইয়া ও তাহার ছেলে মুসলিম সিপাহিদের নজরে পরিয়া গেল। আর যায় কোথায়? হযরত
বিলাল(রাঃ) ওকতিপয় মুসলিম সৈন্য উমাইয়ার উপর ঝাপায়া পড়িলেন। হতোদ্যম পরিশ্রান্ত উমাইয়া
বেশিক্ষন টিকিয়া থাকিতে পারিলনা। হযরত বেলাল(রাঃ) এর তরবারির আঘাতে তাহার মস্তক ছিন্ন
হইয়া যায়। তাহার পুত্র ও মুসলিম সেনাবাহিনির হাতে প্রান হারায়। আব্দুর রহমান তাহাকে
বাচাইবার জন্য কোম চেষ্ঠা করেন নাই। কিন্তু এত বড় শ্ত্রুকে মুসলমানগণ যুদ্ধক্ষেত্র
হইতে বাঁচিয়া যাইতে দিতে পারেন না। আব্দুর রহমান ছিলেন বন্ধু, তাই তিনি বন্ধুত্ব রক্ষা করিয়া ছিলেন সত্য কিন্তু মুসলিম
বাহিনিও নিজেদের কর্তব্য ও দায়িক্ত পালন করিয়া ছিলেন। সে পুত্রসহ বদরেই নিহত হয়েছিল।
এই উমাইয়া কে বাচাইতে যায়া আব্দুর রহমান নিজেও ভীষণ রুপে আহত হইয়া ছিলেন,তিনি নিজের
দুইটি লৌহ বর্ম হারাইয়া ছিলেন। তাই অনেক সময় অক্ষেপ করিয়া তিনি বলিতে যে, বিলাল (রাঃ)আমার
বড় ক্ষতি করিয়াছে,আল্লাহপাক তাহাকে রহম দান করুন।
No comments:
Post a Comment